বুধবার, ০৯ Jul ২০২৫, ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক নেতৃবৃন্দের সাথে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতার মতবিনিময় মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে… এবিএম মোশাররফ হোসেন পটুয়াখালীতে জনজীবন বিপর্যস্ত, উপকূল জুড়ে অতিভারী মাত্রায় বৃষ্টিপাত লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলে অতিভারী বৃষ্টিপাত। সমুদ্র বন্দরে ০৩ নম্বর ও নদী বন্দরে ০১ নম্বর সতর্ক সংকেত কলাপাড়ায় ৫ হাজার প্যাকেট নকল সিগারেট জব্দ।।১লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড সভাপতি টিপু সম্পাদক অমল কলাপাড়া প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন কলাপাড়ায় বিএনপির দিনব্যাপী সাংগঠনিক সভা সৎ এবং সুশিক্ষিত নেতৃত্বের মাধ্যমেই শিক্ষার উন্নয়ন সম্ভব….এবিএম মোশাররফ হোসেন সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলে বৃষ্টিপাত, পায়রা বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল কলাপাড়ায় ফল উৎসব, কৃষক বাজার  ও শিশু পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কলাপাড়ায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সুমনের সদস্য সচিব পদ স্থগিত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন চাঁদাবাজ দখলবাজ এবং দুর্নীতিবাজ মুক্ত মেহেন্দিগঞ্জ গড়তে চাই ।। মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ বিসিসি’র ২২নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক ও ড্রেনেজ নির্মাণের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান বাউফ‌লে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এক যুবককে কুপিয়ে হ-ত্যা চাঁদাবাজ দখলবাজদের বিরুদ্ধে লিখনি বজায় রাখবে বাংলানিউজ – মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ
দেশে নিয়মিতই ঢুকছে সর্বনাশা ইয়াবা

দেশে নিয়মিতই ঢুকছে সর্বনাশা ইয়াবা

Sharing is caring!

অনলাইন ডেস্ক :: দেশজুড়ে ইয়াবার কারবার রমরমা আকার ধারণ করলে ২০১৮ সালের এপ্রিলে সব মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে নামে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। ওই অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় চার শতাধিক মাদক কারবারি, গ্রেফতার হয় পাঁচ হাজার জন। এর পাশাপাশি হয়েছে অজস্র মামলা। তবু ঠেকানো যাচ্ছে না ইয়াবার চালান আসা। দেশে নিয়মিতই ঢুকছে সর্বনাশা মাদক ইয়াবা।

বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলছে, ২০১৮ সাল থেকে পরিচালিত মাদকবিরোধী অভিযানে অন্তত ৪০০ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন, গ্রেফতার হয়েছেন পাঁচ হাজার জন। নিহতদের মধ্যে ২১১ জন কক্সবাজারের ইয়াবা কারবারি ছিলেন, যাদের মধ্যে আবার ৬২ জন মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা। আর যারা গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের মধ্যে কেবল কক্সবাজার থেকেই পাকড়াও হয়েছেন দুই হাজার ৩৮৮ জন। এসময় তাদের কাছে মিলেছে প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ ইয়াবা।

এত কিছুর পরেও গত দুই বছরে দেশে প্রায় ৮ কোটি পিসের মতো ইয়াবা উদ্ধার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ কার্যালয়ের (ইউএনওডিসি) হিসাব অনুযায়ী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়া মাদক মোট আমদানির মাত্র ১০ শতাংশ। অর্থাৎ ১০ ভাগের ৯ ভাগ মাদকই বাজারে থেকে যায়। অতএব, ইয়াবা উদ্ধারের পরিমাণ দেখেই বোঝা যায়, এ মাদক কী পরিমাণে ঢুকছে দেশে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ ও উখিয়া জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অ্যাডিশনাল এসপি) নিহাদ আদনান বলেন, আমরা অধিকাংশ মাদক পাচারকারীকে শনাক্ত করেছি, ধরেছি। ইয়াবা কারবার আগের চেয়ে অনেক কমেছে। তবে তারা পাচারের রুট পরিবর্তন করে কখনো সমুদ্র দিয়ে, কখনো আকাশপথে মাদক পাচার করছে। ঘন ঘন রুট পরিবর্তন উদ্বেগজনক। তবে তাদের ধরতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

ইয়াবাসহ সর্বনাশা মাদকের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালেই ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ ঘোষণা করে সরকার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়মিত অভিযান, গ্রেফতার, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মাদক কারবারিদের প্রাণ হারানোর ঘটনার পরেও গত দুই বছরে ইয়াবা উদ্ধারের পরিমাণ আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এই মাদক এসেই চলেছে মিয়ানমার থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ হয়ে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একটি গবেষণা ইউনিট বলছে, বাংলাদেশের ৮০ লাখ মাদকসেবীর মধ্যে ৭০ লাখই ইয়াবায় আসক্ত। এগুলো বর্তমানে সর্বনিম্ন ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে বলা যায়, ইয়াবা ঘিরে দেশে ১৪ হাজার কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন হচ্ছে।

সম্প্রতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সংস্থা ইয়াবার ভয়াবহতা নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে। প্রতিবেদনে ইয়াবার প্রবেশপথ হিসেবে বর্তমানে কক্সবাজারের সাতঘরিয়াপাড়া, উলুচামারী, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, শাহপরীর দ্বীপ, দমদমিয়া, লেদা, রঙ্গিখালী, মরিচ্যা, রেজুখাল, শাপলাপুর, নোয়াখালীয়াপাড়া, পালংখালী, আমতলী, বান্দরবানের গর্জনবুনিয়া, তুমব্রু ও মৌলভীবাজার সীমান্তের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গা শিবির-সংশ্লিষ্ট এলাকা দিয়ে ইয়াবা আসছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

ওইসব সীমান্তে সতর্ক প্রহরা থাকলেও বন্ধ হচ্ছে না ইয়াবার চালান আসা। একবার সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকতে পারলেই ইয়াবা সড়ক, নৌ ও আকাশপথে সরবরাহ হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এমন পদক্ষেপের পরও ইয়াবার কারবার কেন বন্ধ হচ্ছে না- জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন) ইকবাল হোসেন বলেন, গত ২ বছরে ১২৩ জন মাদক ব্যবসায়ী এখানে আত্মসমর্পণ করেছে। অন্যদের ধরতেও নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। আমরা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।

গত ২ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুই হাজার পিস ইয়াবাসহ তিনজনকে আটক করা হয়, সেসময় নগদ এক কোটি ২৫ লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার জেলা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী মিয়ানমারের ৩৭টি কারখানায় ইয়াবা তৈরি হচ্ছে। বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমারকে এসব ইয়াবার কারখানা গুঁড়িয়ে দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তারা তা করেনি। আমাদের ধারণা ইয়াবা কারবারের সঙ্গে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর অনেক সদস্য জড়িত।

অভিযানের চেয়েও দেশে ইয়াবার চাহিদা হ্রাসের ওপর গুরুত্ব দিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ইয়াবা বিশ্বব্যাপী একটি হুমকি। কোনো দেশ চাইলেই একা ইয়াবার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে না। ইয়াবার চেইনটি সাধারণত চাহিদার ওপর নির্ভর করে। চাহিদা কমাতে না পারায় ইয়াবা ব্যবসাও কমছে না।

মাদক-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের গবেষক প্রফেসর ড. এমদাদুল হক এ বিষয়ে বলেন, পারিবারিক সচেতনতা ও নজরদারির মাধ্যমে আমাদের প্রথমে ইয়াবার চাহিদা কমাতে হবে, তাহলে এমনিতেই এর ব্যবসা ও অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়ে যাবে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD